শবে বরা'য়াত কি ও কেন? এবং করণীয় ও বর্জনীয়


الله تعالى نحمد ونصل ونسلم على رسوله احمد اما بعد


হামাদ্ সালাতে পরসমাচার কথা হল, আল্লাহ তায়ালা উম্মতে মুহাম্মদীরর বয়স বা সময় সীমা স্বল্পতার কারণে মাঝে মাঝে একেকটা অফার দান করেছেন। এই অফার কখনও দৈনিক কখনও সাপ্তাহিক কখনও মাসিক কখনও আমার বাৎসরিক। এমনি ভাবে শবে বরায়াত শবে ক্বদর, ইত্যাদি দিবা নিশি অফারময় করে আল্লাহ তায়ালা বানিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ,,আল্লাহ তুমি অশেষ মেহেরবান। আগের যুগে মানুষ ১০০- ১০০০ বসর জীবিত থাকতো এসময়ের মাঝে যা ইবাদাত বন্দেগী করতে পারতেন। আজ এখন মানুষ ৬০-৮০ বসর জীবন পেয়ে তাদের চেয়ে বেশি বন্দেগী করতে পারে এটা আল্লাহর অশেষ মেহেরবানি ছাড়া কিছু না। ওই সকল অফারের মধ্যে শবে বরায়াতও একটা বিশাল অফার

শবে বরা'য়াতের পরিচয়।


“শব” শব্দটা ফার্সি। যার অর্থ হল-রাত।
আর বরাআত এটি আরবী শব্দ। যার অর্থ হল “মুক্তি পাওয়া। অর্থাৎ জাহান্নাম থেকে মুক্তির পাওয়া। আর জাহান্নাম থেকে মুক্তির রাত হল শবে বারাআত। বরাত বলাটা ভুল। কারণ শবে বরাত ( ﺑﺮﺍﺕ ) মানে হল বিয়ের রাত। সুতরাং আমরা বলব-শবে বারাআত। শবে বারাআতকে হাদিসের পরিভাষায় বলা হয়েছে “লাইলাতুন নিসফি মিনশাবান”( ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ ﺷﻌﺒﺎﻥ ) তথা শাবানের অর্ধ মাসের রাত।
কেউ কেউ “শবে বরাআত” নামে হাদিসে শব্দ না থাকায় এ রাতকে অস্বিকার করার মত খোড়া যুক্তি দিয়ে থাকেন। তাদেরকে আমি বলি-আমরা পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়া আবশ্যক বলি কুরআন হাদিসে বর্ণিত নির্দেশের কারণে। কিন্তু কুরআন হাদিসের কোথাও কি নামায শব্দ আছে? তাওহীদ কে আমরা ঈমানের শর্ত বলি। কিন্তু কুরআন হাদীসের কোথাও তাওহীদ শব্দ নেই। তাই বলে কি তাওহীদ কুরআন হাদীস দিয়ে প্রমাণিত নয়? আমরা যাকে নামায বলি সেই অর্থবোধক কুরআন হাদিসের উদ্ধৃত শব্দ “সালাত”ই হল নামায। আমরা যাকে তাওহীদ বলি কুরআন হাদীসের একত্ববাদ প্রকাশক সকল শব্দই হল এ তওহীদ। তেমনি আমরা যাকে “শবে বারাআত” বলি তথা শাবানের পনের তারিখের রাত বলে থাকি এই অর্থবোধক শব্দ হাদিসে পাওয়া গেলে তা’ই হবে শবে বারাআত। আর এই অর্থবোধক হাদীসে বর্ণিত শব্দ হল “লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান”। সুতরাং তাই হল শবে বারাআত। হাদিসে শবে বারাআত কুরআনে শবে বারাআতের কোন উল্লেখ নাই। কুরআনে কেবল “লাইলাতুল কদর” তথা “শবে কদর” এর কথা উল্লেখ আছে। পবিত্র
কুরআনের পঁচিশ নাম্বার পাড়ার সূরায়ে
দুখানের ২ ও ৩ নং আয়াতে বর্ণিত

শবে বরা'য়াত সম্পর্কে বিভিন্ন হাদীসে ফজিলত আছে বলে প্রমান পাওয়া যায়।


হযরত আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন যে, শা’বান মাসের ১৫ পনের তারিখ দিনগত রাতে জিবরাইল আলাইহিস সালাম আমার নিকট এসে বললো- হে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আপনি আসমানের দিকে
তাকান। নবীজি বলেন, আমি আসমানের
দিকে তাকিয়ে দেখলাম যে, আসমানের
সব ক’টি দরজা উম্মুক্ত করে দেয়া
হয়েছে। প্রথম দরজায় দাঁড়িয়ে এক ফিরিস্তা ঘোষনা দিচ্ছে, যে ব্যক্তি এ রাতে রুকু করবে সে অনেক ভাগ্যবান হবে।
দ্বিতীয় দরজায় দাঁড়িয়ে আরেক ফিরিস্তা ঘোষনা দিচ্ছে, যে ব্যক্তি এ রাতে সিজদা করবে সেও অনেক ভাগ্যবান হবে।
তৃতীয় দরজায় দাঁড়িয়ে আরেক ফিরিস্তা
ঘোষনা দিচ্ছে, যে ব্যক্তি এ রাতে
আল্লাহ তায়ালার দরবারে দু’আ করবে
সেও অনেক ভাগ্যবান হবে।
চতুর্থ দরজায় দাঁড়িয়ে আরেক ফিরিস্তা
ঘোষনা দিচ্ছে, যে ব্যক্তি এ রাতে
আল্লাহর জিকিরে মশগুল থাকবে সেও
অনেক ভাগ্যবান হবে।
পঞ্চম দরজায় দাঁড়িয়ে আরেক ফিরিস্তা
ঘোষনা দিচ্ছে, যে ব্যক্তি এ রাতে
আল্লাহ পাকের দরবারে কান্নাকাটি
করবে সেও অনেক ভাগ্যবান হবে।
ষষ্ঠ দরজায় দাঁড়িয়ে অন্য এক ফিরিস্তা
ঘোষনা দিচ্ছে, আজকে সকল মুসলমান
মুমিনের জন্যে সৌভাগ্য।
সপ্তম দরজায় দাঁড়িয়ে আরেক ফিরিস্তা
ঘোষনা দিচ্ছে, আছে কি আল্লাহর নিকট
চাওয়ার মতো কোনো বান্দা? সে যা
চাইবে তাকে তা দেয়া হবে এবং
অষ্টম দরজায় দাঁড়িয়ে আরেক ফিরিস্তা
ঘোষনা দিচ্ছে, আজকে যে বান্দা
আল্লাহর নিকট স্বীয় গুনাহের ক্ষমা
প্রার্থনা করবে তাকে ক্ষমা করে দেয়া
হবে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেন, আমি জিবরাইল
আলাইহিস সালামকে জিজ্ঞাসা
করলাম, আসমানের এ দরজাগুলো কখন পর্যন্ত খোলা থাকবে। উত্তরে তিনি
বললেন, রাত্রির প্রথম প্রহর থেকে সকাল
হওয়া পর্যন্ত খোলা থাকবে। তার পর
জিবরাইল আলাইহিস সালাম বললেন, হে
মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম, এ রাতে আল্লাহ তায়ালা এতো
পরিমাণ বান্দাদেরকে জাহান্নাম থেকে
মুক্তি দেন, যে পরিমাণ পশম কালব
গ্রোত্রের বকরীর গায়ে রয়েছে।
(গুনিয়াতুত তালেবীন : ৩৬২)

উল্লেখ্য : আরবে প্রত্যেক গোত্রেরই
অধিক পরিমাণে বকরী থাকতো। কিন্তু বনূ
কালবের সবচেয়ে বেশী বকরী ছিলো। এই
সবগুলো বকরীর শরীরে যে পরিমাণ পশম রয়েছে, আল্লাহ তায়ালা তার থেকেও অধিক পরিমাণ বান্দাদেরকে মাফ করে দেন। এখানে মূলত সংখ্যাধিক্য বুঝানো উদ্দেশ্য। অর্থাৎ একটি বকরীর শরীরেই তো অনেক পশম থাকে, তাহলে সমস্ত বকরীগুলোর শরীরে কি পরিমাণ পশম থাকতে পারে? এতো অধিক পরিমাণে আল্লাহ পাক বান্দাদেরকে মাফ করবেন।

# আরো বর্ণিত আছে। যেমন-
ﻋﻦ ﻋﻠﻲ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﻃﺎﻟﺐ ﻗﺎﻝ ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ
ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ‏( ﺇﺫﺍ ﻛﺎﻧﺖ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ
ﺷﻌﺒﺎﻥ ﻓﻘﻮﻣﻮﺍ ﻟﻴﻠﻬﺎ ﻭﺻﻮﻣﻮﺍ ﻧﻬﺎﺭﻫﺎ . ﻓﺈﻥ ﺍﻟﻠﻪ
ﻳﻨﺰﻝ ﻓﻴﻬﺎ ﻟﻐﺮﻭﺏ ﺍﻟﺸﻤﺲ ﺇﻟﻰ ﺳﻤﺎﺀ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ . ﻓﻴﻘﻮﻝ
ﺃﻻ ﻣﻦ ﻣﺴﺘﻐﻔﺮ ﻟﻲ ﻓﺄﻏﻔﺮ ﻟﻪ ﺃﻻ ﻣﻦ ﻣﺴﺘﺮﺯﻕ
ﻓﺄﺭﺯﻗﻪ ﺃﻻ ﻣﺒﺘﻠﻰ ﻓﺄﻋﺎﻓﻴﻪ ﺃﻻ ﻛﺬﺍ ﺃﻻ ﻛﺬﺍ ﺣﺘﻰ
ﻳﻄﻠﻊ ﺍﻟﻔﺠﺮ )
হযরত আলী বিন আবু তালীব রাঃ থেকে
বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-যখন
শাবান মাসের অর্ধেকের রজনী আসে
(শবে বরায়াত)তখন তোমরা রাতে নামায
পড়, আর দিনের বেলা রোযা রাখ। নিশ্চয়
আল্লাহ এ রাতে সূর্য ডুবার সাথে সাথে
পৃথিবীর আসমানে এসে বলেন-কোন
গোনাহ ক্ষমাপ্রার্থী আছে কি আমার
কাছে? আমি তাকে ক্ষমা করে দিব।
কোন রিজিকপ্রার্থী আছে কি? আমি
তাকে রিজিক দিব। কোন বিপদগ্রস্থ
মুক্তি পেতে চায় কি? আমি তাকে
বিপদমুক্ত করে দিব। আছে কি এমন, আছে কি তেমন? এমন ভাবে ফজর পর্যন্ত বলতে থাকেন।{সূনানে ইবনে মাজাহ/ হাদীস
নং-১৩৮৮/শুয়াবুল ঈমান/ হাদীস নং-৩৮২২}
আরও বর্নিত আছে। যেমন,
ﻋﻦ ﻋﺎﺋﺸﺔ : ﻗﺎﻟﺖ ﻓﻘﺪﺕ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ
ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻟﻴﻠﺔ ﻓﺨﺮﺟﺖ ﻓﺈﺫﺍ ﻫﻮ ﺑﺎﻟﺒﻘﻴﻊ ﻓﻘﺎﻝ
ﺃﻛﻨﺖ ﺗﺨﺎﻓﻴﻦ ﺃﻥ ﻳﺤﻴﻒ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻚ ﻭﺭﺳﻮﻟﻪ ؟ ﻗﻠﺖ
ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺇﻧﻲ ﻇﻨﻨﺖ ﺃﻧﻚ ﺃﺗﻴﺖ ﺑﻌﺾ ﻧﺴﺎﺀﻙ
ﻓﻘﺎﻝ ﺇﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﺰ ﻭ ﺟﻞ ﻳﻨﺰﻝ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ
ﺷﻌﺒﺎﻥ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﺴﻤﺎﺀ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﻓﻴﻔﻐﺮ ﻷﻛﺜﺮ ﻣﻦ ﻋﺪﺩ ﺷﻌﺮ
ﻏﻨﻢ ﻛﻠﺐ
অনুবাদ-হযরত আয়শা রাঃ বলেন-এক রাতে রাসূল সাঃ কে না পেয়ে খুজতে বের
হলাম। খুঁজতে খুঁজতে জান্নাতুল বাকীতে
[মদীনার কবরস্থান] গিয়ে আমি তাঁকে
দেখতে পেলাম। তিনি বললেন-কি
ব্যাপার আয়শা? [তুমি যে তালাশে বের
হলে?] তোমার কি মনে হয় আল্লাহ এবং
তাঁর রাসূল তোমার উপর কোন অবিচার
করবেন? [তোমার পাওনা রাতে অন্য কোন বিবির ঘরে গিয়ে রাত্রিযাপন করবেন?] হযরত আয়শা রাঃ বললেন- আমার ধারণা হয়েছিল আপনি অন্য কোন বিবির ঘরে গিয়েছেন। রাসূল সাঃ তখন বললেন-যখন শাবান মাসের ১৫ই রাত আসে অর্থাৎ যখন শবে বরাত হয়, তখন আল্লাহ পাক এ রাতে প্রথম আসমানে নেমে আসেন। তারপর বনু কালব গোত্রের বকরীর পশমের
চেয়ে বেশী সংখ্যক বান্দাদেরকে ক্ষমা
করে দেন। {সুনানে তিরমিযী/ হাদীস
নং-৭৩৯/মুসনাদে আহমাদ/হাদীস
নং-২৬০২৮/ মুসনাদে আব্দ বিন হুমাইদ/
হাদীস নং-১৫০৯

লা' মাজহাবীদের শানে কিছু কথা

যেহেতু গায়রে মুকাল্লিদ তথা কথিত
আহলে হাদীস ভাইয়েরা এ রাতের
ফযীলতকে অস্বিকার করে থাকেন। তাই
তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং অন্ধভাবে
মান্যবর ব্যক্তিত্ব কথিত আহলে
হাদিসদের ইমাম শায়েখ নাসীরুদ্দীন
আলবানী রহঃ তার প্রসিদ্ধ গ্রন্থ “আস
সিলসিলাতুস সাহিহাহ আল
মুজাল্লাদাতুল কামিলাহ” গ্রন্থে ৩ নং
খন্ডে ১১৪৪ নং অধ্যায়ে ২১৮ নাম্বার
পৃষ্ঠায় শবে বারাআত সম্পর্কে হাদিস
এনে যে দীর্ঘ আলোচনা করে যে মত
ব্যক্ত করেছেন তা তোলে ধরা হল-
ﻋﻦ ﻣﻌﺎﺫ ﺑﻦ ﺟﺒﻞ ﻋﻦ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ
ﻗﺎﻝ : ‏( ﻳﻄﻠﻊ ﺍﻟﻠﻪ ﺇﻟﻰ ﺧﻠﻘﻪ ﻓﻲ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ
ﺷﻌﺒﺎﻥ ﻓﻴﻐﻔﺮ ﻟﺠﻤﻴﻊ ﺧﻠﻘﻪ ﺇﻻ ﻟﻤﺸﺮﻙ ﺃﻭ ﻣﺸﺎﺣﻦ )
অনুবাদ-হযরত মুয়াজ বিন জাবাল রাঃ
থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ
করেছেন-অর্ধ শাবানের রাতে [শবে
বরাতে]আল্লাহ তাআলা তাঁর সমস্ত
মাখলুকের প্রতি মনযোগ আরোপ করেন
এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ ভাবাপন্ন ব্যক্তি
ছাড়া সকলকে ক্ষমা করে দেন। {সহীহ
ইবনে হিব্বান/ হাদীস নং-৫৬৬৫/ মুসনাদুল
বাজ্জার/হাদীস নং-২৭৫৪/ মুসনাদে
ইসহাক বিন রাহওয়াই/ হাদীস নং-১৭০২/
আল মুজামুল আওসাত/ হাদীস নং-৬৭৭৬/আল মুজামুল কাবীর/ হাদীস নং-২১৫/সুনানে ইবনে মাজা/ হাদীস নং-১৩৯০/মুসনাদুশ শামীন/ হাদীস নং-২০৩/মুসন্নাফে ইবনে আবী শাইবা/ হাদীস
নং-৩০৪৭৯/শুয়াবুল ঈমান/ হাদীস
নং-৬২০}
আলবানী তার সিলসিলাতুস সাহিহাহর ৩নং খন্ডের ১৩৫ নং পৃষ্ঠায় বলেন। “এই হাদিসটি সহীহ" এটা সাহাবাদের এক জামাত বর্ণনা করেছেন বিভিন্ন সূত্রে যার একটি অন্যটিকে শক্তিশালী করেছে। তাদের মাঝে রয়েছেন # মুয়াজ বিন জাবাল রাঃ # আবু সা’লাবা রাঃ # আব্দুল্লাহ বিন আমর রাঃ # আবু মুসা আশয়ারী রাঃ # আবু হুরায়রা রাঃ # আবু বকর সিদ্দীক রাঃ # আউফ বিন মালিক রাঃ # আয়েশা রাঃ প্রমুখ সাহাবাগণ। উপরে বর্ণিত সবক’টি বর্ণনাকারীর হাদিস তিনি তার কিতাবে আনার মাধ্যমে সুদীর্ঘ আলোচনার পর শেষে
তিনি বলেন-
ﻭ ﺟﻤﻠﺔ ﺍﻟﻘﻮﻝ ﺃﻥ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﺑﻤﺠﻤﻮﻉ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﻄﺮﻕ
ﺻﺤﻴﺢ ﺑﻼ ﺭﻳﺐ ﻭ ﺍﻟﺼﺤﺔ ﺗﺜﺒﺖ ﺑﺄﻗﻞ ﻣﻨﻬﺎ
ﻋﺪﺩﺍ ﻣﺎ ﺩﺍﻣﺖ ﺳﺎﻟﻤﺔ ﻣﻦ ﺍﻟﻀﻌﻒ ﺍﻟﺸﺪﻳﺪ ﻛﻤﺎ ﻫﻮ
ﺍﻟﺸﺄﻥ ﻓﻲ ﻫﺬﺍ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ، ﻓﻤﺎ ﻧﻘﻠﻪ
ﺍﻟﺸﻴﺦ ﺍﻟﻘﺎﺳﻤﻲ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻓﻲ ” ﺇﺻﻼﺡ
ﺍﻟﻤﺴﺎﺟﺪ ” ‏( ﺹ ১০৭ ) ﻋﻦ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﺘﻌﺪﻳﻞ
ﻭ ﺍﻟﺘﺠﺮﻳﺢ ﺃﻧﻪ ﻟﻴﺲ ﻓﻲ ﻓﻀﻞ ﻟﻴﻠﺔ ﺍﻟﻨﺼﻒ ﻣﻦ
ﺷﻌﺒﺎﻥ ﺣﺪﻳﺚ ﺻﺤﻴﺢ ، ﻓﻠﻴﺲ ﻣﻤﺎ ﻳﻨﺒﻐﻲ
ﺍﻻﻋﺘﻤﺎﺩ ﻋﻠﻴﻪ ، ﻭ ﻟﺌﻦ ﻛﺎﻥ ﺃﺣﺪ ﻣﻨﻬﻢ ﺃﻃﻠﻖ ﻣﺜﻞ
ﻫﺬﺍ ﺍﻟﻘﻮﻝ ﻓﺈﻧﻤﺎ ﺃﻭﺗﻲ ﻣﻦ ﻗﺒﻞ
ﺍﻟﺘﺴﺮﻉ ﻭ ﻋﺪﻡ ﻭﺳﻊ ﺍﻟﺠﻬﺪ ﻟﺘﺘﺒﻊ ﺍﻟﻄﺮﻕ ﻋﻠﻰ ﻫﺬﺍ
ﺍﻟﻨﺤﻮ ﺍﻟﺬﻱ ﺑﻴﻦ ﻳﺪﻳﻚ . ﻭ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻫﻮ ﺍﻟﻤﻮﻓﻖ
অর্থাৎ “সারকথা হল এই যে, নিশ্চয় এই
হাদিসটি এই সকল সূত্র পরম্পরা দ্বারা
সহীহ, এতে কোন সন্দেহ নেই। আর সহীহ
হওয়া এর থেকে কম সংখ্যক বর্ণনার
দ্বারাও প্রমাণিত হয়ে যায়, যতক্ষণ না
মারাত্মক কোন দুর্বলতা থেকে বেঁচে
যায়, যেমন এই হাদিসটি হয়েছে। আর যা
বর্ণিত শায়েখ কাসেমী থেকে তার
প্রণিত “ইসলাহুল মাসাজিদ” গ্রন্থের ১০৭
নং পৃষ্ঠায় জারাহ তা’দীল ইমামদের
থেকে যে, “শাবানের অর্ধ মাসের রাতের
কোন ফযীলত সম্পর্কে কোন হাদিস নেই
মর্মে” সেই বক্তব্যের উপর নির্ভর করা
যাবেনা। আর যদি কেউ তা মেনে নেয়
সে হবে ঝাঁপিয়ে পড়া(ঘারতেড়া)
স্বভাবের, আর তার ব্যখ্যা-বিশ্লেষণ ও
গবেষণা-উদ্ভাবনের কোন যোগ্যতাই নেই
এরকমভাবে যেমন আমি করলাম”।
শায়েখ আলবানী রহঃ এর বিশ্লেষণ
থেকে একথা নির্ধিদ্ধায় আমরা বলতে
পারি হাদিস দ্বারা শবে বারাআত
প্রমাণিত।

একটি প্রশ্নের জয়াব

অনেক গায়রে মুকাল্লিদ না বুঝে প্রশ্ন করে থাকেন যে, এ রাত ফযীলতপূর্ণ একথা ঠিক আছে। কিন্তু এ রাতে আমল করতে হবে একথাতো কোথাও নেই। তাই আমল করা জায়েজ নেই। বরং বেদআত।
এই প্রশ্নের দাত ভাংগা জবাব এভাবে দিবো যে, খুবই অবাক লাগে তোমাদের এই ভ্রান্ত ধারণার উপর। আচ্ছা! তোমাদের ফোনে যখন হঠাৎ বার্তা চলে আসে যেখানে একথা লেখা থাকে যে,যদি আজকের দিনের মধ্যে ৯ টাকা রিসার্চ করলে এক জিবি ইন্টারনেট দেওয়া হবে। তখন তোমরা কি করো এই কৃত্তিম অফার কি ছেড়ে দাও? সবাই বলবে যে, গ্রহণ করি। আরে মূর্খের জাতী! সাধারণ একটা একটা দুনিয়াবী অক্ষন অফারকে যদি গ্রহণ করতে পারো, তো এত বড় একটা ক্ষণময় অফার গ্রহণ করতে কে বাধা দিলো? আল্লাহ তায়ালা এত বড় অফার দিয়েছেন মানুষকে নাকে তেল দিয়ে ঘুমানোর জন্য নয়, বরং অফারটা গ্রহণ পূর্বক আমল করে নিজের জীবনে সার্বিক রহমত ও বরকত ও জাহান্নম থেকে মুক্তি নামক লভ্যাংশটা গ্রহণ করার জন্যই এই অফারময় রাত্রি। তবে মনে রাখতে হবে, যে কাজ রাসুল (সাঃ) বা তার সিহাবী গোন করেন নি তা করা হারাম বিদয়াত। আর বিদয়াতের স্থান জাুান্নাম।



এ রাত্রে কিছু করণীয়

এ মহামান্বিত রাতে করার মত নির্দিষ্ট
কোন আমল নেই। সবাই কোথাও একত্র হয়ে সম্মিলিত কোন আমলও নেই। উল্লেখিত হাদীসের আলোকে এ রাতের আমল হল-
(১)-ইস্তিগফার তথা আল্লাহর কাছে
ক্ষমাপ্রার্থনা করা।
(২)-আড়ম্বরপূর্ণভাবে নয় স্বাভাবিকভাবে
হলে কবর যিয়ারত করা।
(৩)-অনির্ধারিতভাবে নফল ইবাদত করা।
(৪)-পরদিন রোযা রাখা।
এ রাত্রে কিছু বর্জনীয়

(১)- হালুয়া রুটির মত আনন্দ উল্লাসের
আয়োজন। আল্লাহর কাছ থেকে মাফ
পেতে হলে তার ইবাদত করতে হবে,
খাওয়া দাওয়ার মধ্য দিয়ে ফুর্তি করার
মাধ্যমে নয়
(২)- আতশবাজি করা, রং ছিটানো।
(৩)- সম্মিলিত কোন আমলকে এই রাতে
আবশ্যকীয় মনে করা সুষ্পষ্ট বিদআত।
শান্তিকামী প্রিয় মুসলিম ভাই বোনেরা! আসুন এই রাতে নিজে বেশি আমল করি অপরকে করার জন্য দাওয়াত ও সুযোগ করে দেই। আর স্রষ্টার কাছে দোয়া করি!
হে আল্লাহ! তুমি আমাদের সত্যকে সত্য
হিসেবে উপস্থাপন করে দাও, যেন তা
পালন করতে পারি, আর মিথ্যাকে
মিথ্যা হিসেবে উপস্থাপিত করে দাও,
যেন এ থেকে বিরত থাকতে পারি।
আমিন! আলহামদুলিল্লাহি
রাব্বিল আ'লামিন।




বিজিট করুন

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ছোট্ট একটি শিশু জ্বলন্ত চুলার ভিতরে গিয়ে জ্বলন্ত কয়লা হাতে তুলে মুখে নেওয়ার সাথে সাথেই‌‌‍ স্বর্ণের টুকরায় পরিণত হলো।